অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে কক্সবাজারের আলোচিত উপজেলা উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, মাদক ও মানবপাচার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিত্যদিনের ঘটনা। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার ও নিজেদের অবস্থান সংহত করতে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়ায় রোহিঙ্গারা। মাঝে মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অভিযানের মুখে কেউ কেউ গ্রেপ্তার হলেও থামানো যাচ্ছে না ক্যাম্পের সন্ত্রাসী গ্রুপের অপরাধ তত্পরতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড়ি রোহিঙ্গা ডাকাতরা বড় বড় ইয়াবার গডফাদার। তারা মূলত ইয়াবার চালান খালাস করতেই ডাকাতের রূপ ধারণ করেছে এবং বিভিন্ন সময় অপহরণ করেও মুক্তিপণ আদায় করছে। রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার কমান্ডারসহ বেশ কিছু সন্ত্রাসী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে আটকের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এখন অনেকটা স্বাভাবিক বলে মনে করছে উখিয়া থানা পুলিশ।
স্থানীয় শামসুল আলম নামের একজন বলেন, ডাকাতরা স্থানীয়দের চিঠির মাধ্যমে খবর দেয়, জাদিমুড়া এলাকায় ডাকাতি হবে।
এমন বার্তায় আতঙ্কে রাত কাটাতে হয়েছে স্থানীয়দের। এখন একটু পরিস্থিতি স্বাভাবিক বা শান্ত মনে হলেও কখন কী যে হয়ে যায় তা বলা মুশকিল।
টেকনাফের জুবায়ের নামের অপর এক ব্যক্তি জানান, রোহিঙ্গা ডাকাতের ভয়ে অনেক সময় স্থানীয় মেম্বার, গ্রাম পুলিশ ও সাধারণ মানুষ রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওকর্মীদের দাবি, অপরাধ জগত্ নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে যেসব সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে তারা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি ও খুনাখুনিতে জড়িয়ে পড়ে।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উখিয়া-টেকনাফের মানুষ ইয়াবা, সন্ত্রাস, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং সর্বোপরি রোহিঙ্গাদের থেকে বাঁচতে চায়। তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পগুলোর ভেতরে ১৫ থেকে ২০টি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে চলছে মাদক ব্যবসাসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড।
উখিয়া থানার ওসি আরিফ হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা আগের তুলনায় এখন অনেক ভালো। ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত আছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
মাদকসহ প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে।
সুত্র: কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত